পোস্টগুলি

নভেম্বর, ২০২১ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

নিধিবনের রহস্যময় লীলা

ছবি
নিধিবন নিয়ে সরকারি নির্দেশনামা, সূর্যাস্তের পর কারো প্রবেশাধিকার নেই “আজি নিধুবনে শ্যাম-বিনোদিনী ভোর  দোঁহার রূপের নাহিকো উপমা  সুখের নাহিকো ওর” অজ্ঞাত পদকর্তার মধুরকান্তি পদাবলীর এই দুটি চরণও স্বীকার করে নিয়েছে নিধুবনের রহস্য। নিধুবন বা নিধিবন—বৃন্দাবনের এক রহস্যময় অরণ্য, যেখানে প্রতিরাতে জেগে ওঠে এক ঐশ্বরিক মায়া। রচিত হয় কৃষ্ণপ্রেমের মিলন-আসর। সখী পরিবৃত হয়ে কৃষ্ণ ও রাধার সেই মধুর মিলনের দৃশ্য জাগতিক নয়, জাগতিক চোখে তাই সে দৃশ্য দেখাও যায় না।       একটা দুটো নয়, আট-আটখানা তালা! সন্ধের অন্ধকার গাঢ় হয়ে নামার আগেই যেগুলি বন্ধ করে দেয় বৃন্দাবনের রঙমহল আর বাঁকেবিহারি মন্দিরের দরজা। বন্ধ হয়ে যায় নিধিবনের ফটকও। সূর্যের শেষ কিরণের দ্যুতি তখন আগত রাতের বন্দোবস্তকে ক্রমাগত তাড়া দিয়ে বলছে—তৈরি হও, তৈরি হও, সময় বেশি নেই আর। মানুষ তো কোন্‌ ছাড় পশু-পাখিও বোঝে সেই সময়ের ঘোষণা—সন্ধে নামার আগেই তাই নিধিবন ছেড়ে চলে যেতে থাকে তারাও। কেননা সূর্যাস্তের পর এখানে ইহজগতের কোনো প্রাণীরই প্রবেশাধিকার নেই। দিনের বেলায় প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর এই অরণ্যকে মুখরিত রাখে যেসব পাখি; দিনে...

ওপারের হাতছানি ও মৃত্যুহীন পান্নালাল

ছবি
  পৃথিবীর কেউ ভালো তো বাসে না, / এ-পৃথিবী ভালো বাসিতে জানে না,/ যেথা আছে শুধু ভালোবাসাবাসি/  সেথা যেতে প্রাণ চায় মা– গানের কলি কমলাকান্তের হলেও এ-গানকে বাঙালির মরমে বিঁধিয়ে দিয়ে গিয়েছেন যিনি, তিনি শিল্পী পান্নালাল ভট্টাচার্য। শুধু শিল্পী বললে অবশ্য ভুল হয়, রামপ্রসাদ-কমলাকান্তদের মতোই পান্নালালও ছিলেন সংসারে এক সাধক। যেভাবে বাংলার শাক্তগানগুলিতে সংসার এবং সাধনার দ্বন্দ্ব উঠে আসে, পান্নালালের সমগ্র জীবন যেন সেই দ্বন্দ্বেরই আকর। স্ত্রী ও তিন কন্যা নিয়ে ঘোরতর সংসারী হয়েও শ্মশানের বৈরাগ্য আর মায়ের দেখা পাওয়ার আবেগে উদ্বেলিত এই মানুষটির জাদু-কণ্ঠে গাওয়া সেই বিখ্যাত গানগুলি, বাঙালির শক্তি আরাধনার আসরে মন্ত্রে মতোই অমলিন। রেকর্ড-ক্যাসেট-সিডির যুগ পেরিয়ে ইন্টারনেট জমানায় দাঁড়িয়েও তাই বলতে কোনো দ্বিধা নেই যে শ্যামাসংগীত এবং পান্নালাল কার্যত সমার্থক দুটি শব্দ, তাঁর অস্বাভাবিক রহস্যমৃত্যুর অর্ধ-শতাব্দী পরেও।   সঙ্গীত ও ভক্তির উত্তরাধিকার পান্নালাল পেয়েছিলেন পারিবারিক সূত্রেই। শৈশবে পিতৃহারা পান্নালালের কাছে তাঁর বাবা-মা দুইই ছিলেন তাঁর মেজদা, সেকালের সঙ্গীত জগতের প্রবাদ-পুরুষ ধন...

হেস্টিংস হাউসে আজও সাহেবি ভূতের আনাগোনা!

ছবি
  হেস্টিংস হাউস আছে না নেই? মানে ভূত আছে না নেই? এটাই যাবতীয় ভূতের গল্পের মূল প্রশ্ন। আছের দিকেই পাল্লা ভারি। নইলে গল্প জমে না। ভূত যে আছে সে বিষয়ে অকাট্য প্রমাণ আর যুক্তি বুনেই এগিয়ে চলে সেইসব গল্প, অবিশ্বাসীদের মনে বড়োসড় ঘা খাইয়ে গল্পের শেষে ঘোষণা হয় ‘আছে আছে, সব আছে…’। ভূতের এই থাকা না থাকার উপর অবশ্য ভূতের ভয় কিংবা ভূতের গল্প নির্ভর করে না, বাঙালির আড্ডার আসরে দু’এক জন এমন লোক থাকবেই, যাঁদের ভূত দেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে, এবং সে গল্প রোমাঞ্চ মিশিয়ে চা-এর আসরে বলা হবে, এ একেবারে অবধারিত কালচার। ভূতেরা এমনিতেই চিরজীবী, কাজেই এই যে শহর বদলাচ্ছে, পরিবেশ বদলাচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে ভূতেদের সনাতন ঠিকানা— ভূতুড়ে বাড়িগুলির চেহারা যাচ্ছে বদলে— ভূতেদের সেই ক্রাইসিস নিয়ে মজাদার বাংলা সিনেমার হতে পারে বটে কিন্তু সমস্যার সমাধান এতে হয় না। কলকাতার ভূতসমাজে সাহেব মেম ভূতেদের ‘ভারত ছাড়ো’ বলে খেদানোর কোনও উপায় কিন্তু নেই, তাঁরা ছিলেন, তাঁরা আছেন, এবং তাঁরা থাকবেনও।  মহামান্য হেস্টিংস বাহাদুরের স্বনামধন্য ভূতটির কথাই ধরা যাক, তিনি যে এখনও বহাল তবিয়তেই আছেন সেকথা কলকাতার আলিপুর অঞ্চলে পা দিলেই শোনা ...