চোদ্দ ভূতের আসরে
কথায় আছে বারো ভূতের কারবার, কিন্তু দিনটা যখন চতুর্দশী, তখন চোদ্দ পুরুষের আবির্ভাব ঠ্যাকায় কে। কাজেই চোদ্দ ভূতের আসর বসাবার এই হল দিন। আজ ভূত চতুর্দশী। ভূতেদের জন্য বেজায় শুভ দিন(!) কিন্তু এই চতুর্দশীতে কি সত্যিই ভূতেরা আসে? ভূত চতুর্দশী কী ভাবে পালন করতে হয়, তা বাঙালিকে শেখানো নিষ্প্রয়োজন। এমন দিনে যে তেঁনাদের আনাগোনা বেলাগাম হয়, সেও কোনও নতুন কথা নয়। অতএব, ঘরের নানা স্থানে চোদ্দটি প্রদীপ দেওয়া, চোদ্দটি শাক খাওয়া, ছেলেদের কপালের ডান দিকে আর মেয়েদের কপালের বাঁদিকে ঘি-তুলসীপাতা-কাজল ধারণের কথা বিশদে বলার কোনো মানে হয় না। এসব সকলেরই জানা।
কিন্তু ভূত কি সত্যিই আছে? নাকি নেই? আদি অনন্তকাল ধরে ভূত বিষয়ক যাবতীয় চর্চার মৌলিক প্রশ্ন এটিই। আছের দিকেই পাল্লা ভারী। বরাবর। আছেই তো। আছেন তাঁরা, তেঁনারা। কিন্তু এমনই আশ্চর্য এই ‘থাকার’ অর্থ যে ‘থাকা আর না-থাকা’র মাঝে প্রায়শই গুলিয়ে যায়, ‘না-থাকা’ই হয়ে ওঠে ‘থাকা’। কে যেন আছে, কী যেন ছিল ওখানে, ওই যে অন্ধকারে, কার একটা শব্দ, কীসের একটা গন্ধ, কী যেন চলে গেল হঠাৎ, এমন অভিজ্ঞতা আমাদের সকলের জীবনেই রয়েছে। যেমন এই লেখাটি পড়তে পড়তেই আপনি যদি ঘাড়ের ঠিক পিছনে ঠাণ্ডা নিশ্বাস ফেলার একটা অনুভব পান, চমকে পিছনে ফিরে আপনি কাউকেই দেখতে পাবেন না বটে, কিন্তু কাউকে দেখে ফেলার এই ভয় মনের ভিতর ঘুরপাক খেয়ে যাবে সারাক্ষণ।
বিজ্ঞান ভূতকে নাকচ করলেও জিজ্ঞাসাকে নাকচ করতে পারেনি। আর আমার মতো যারা সাহিত্যের রসে খুব সহজেই মজে যান তাদের কাছে ভয় ভীতি এক অনাবিল ‘ব্রহ্মস্বাদ সহোদরা’— অর্থাৎ ‘রস’, নাট্যশাস্ত্রের ভাষায় ‘ভয়ানক রস’। যার উৎসারণে শরীরের রোমাঞ্চ, কাঁটা দেওয়ার অনুভব, শুকিয়ে যাওয়া গলা, ঘেমে ওঠা ঘাড়ের কাছটা আসলে জন্ম দেয় ক্যথারসিসের… ভূতের গল্প শোনার, পড়ার অনাবিল এক আনন্দের। ভূত আছে না নেই – এই উত্তরের মীমাংসার চেয়েও তাই বড়ো হয়ে ওঠে আমার এই ‘থাকা’, এই যে আমি আজ আছি, হঠাৎ যদি আমি ‘না-থাকি’ তাহলে কী হবে আমার এই ‘থাকা’র, কেমনই বা হবে আমার সেই ‘না-থাকা’। অতি আধুনিক দিন যাপনের এই সংকটকালে অস্তিত্ব সংকটের এইসব প্রশ্নই ‘ভূত’ ধারণাটিকে এই বিজ্ঞানের আলোতেও বড়ো বেশি প্রাসঙ্গিক রেখেছে। তেরচাভাবে পড়া টর্চের আলোর প্রতিফলনের খেলার নিয়ম-কানুন জেনে ফেলেও কোথাও যেন রয়ে গেছে একটুকরো অন্ধকার, নিকষ, কালো। যার ওপাড়ে কিছু না-থকার কথা ভাবলেই বরং ভয় করে বেশি, আর তাই তো গল্পের মোড়কে, শাস্ত্রের আচারে সেই ‘না-থাকা’র ‘থাকা’কে উদ্যাপন করা—বারবার, কখনও মন্ত্রে, কখনও কল্পনায়, উৎসর্গ করায়, উদযাপনে, উপাচারে। ভূত চতুর্দশী তাই ধর্মীয় উদ্যাপন হয়েও একটি আধুনিক তাৎপর্য বহন করে বলে আমার মনে হয়।
কিন্তু গোল বাঁধে ভূত শব্দটা নিয়েই। “বাংলা শব্দ ‘ভূত’-এর আভিধানিক অর্থ খুঁজলে আমরা পাব ‘অতীত’ অর্থাৎ ‘যা ছিল’। পাশাপাশি আবার ভূত মানে যা বর্তমান। বিশেষণ অর্থে ‘ভূত’ শব্দে অতীত বোঝায়। আর বিশেষ্য ‘ভূত’ সাধারণভাবে কোনো ব্যক্তিত্ব বা অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেয়। একদিকে ‘ভূত’ প্রবলভাবে বর্তমান। ‘পঞ্চ ভূত’-এর ধারনাটাই তার প্রমাণ।” (ঋকসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘কে আছে পিছনে?’, আব্দুল কাফি ও ঋকসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় (সম্পাদিত), ছায়াশরীরের গল্প: সেকাল একালের ভূতের গল্প, কলকাতা: তৃতীয় পরিসর, জানুয়ারি ২০১৭, পৃ. ১৬।)
তার পরেও ভূত শব্দটা বড্ড ঝামেলার! ভূত বলতে যে কেবল মৃত্যু পরবর্তী অস্তিত্ব বোঝায় না একথা ব্যাকরণেই বলছে। ভূত শব্দের ব্যাখ্যা যে হতে পারে উপাদান, তারও প্রমাণ ওই ‘পঞ্চভূত’ ধারনায়। ক্ষিতি-অপ-তেজ-মরুৎ-ব্যোম— পঞ্চভূত, যা দিয়ে নির্মিত আমাদের এই থাকার জগত, যা দিয়ে তৈরি আমরাও। আমদের সবকিছুই। লক্ষ্যণীয়, ভূত চতুর্দশীতে যে চোদ্দটি প্রদীপ আমরা জ্বালছি, তাও কিন্তু এই পঞ্চভূতের উপাদানেই তৈরি। ঠিক যেমন আমাদের এই শরীর! মাটি দিয়ে তৈরি হয় প্রদীপের কায়া, জলে তা আকার নেয়, আগুনে তা হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত, হাওয়া তাকে দেয় আলোকময়তা, এবং মহাশূন্য জেগে থাকে তার খোলে।
কাজেই ভূত চতুর্দশীর তাৎপর্য বহুমাত্রিক। তবু ভূত শব্দের যোগ ধরে অতীত এবং মৃতদেরও এই চতুর্দশীর সঙ্গে সংযোগ স্বীকার না করে উপায় নেই। কেননা “… ভূত পুরোনো সময়ের দ্যোতনা নিয়ে আসে। আসেই। যে কোনো ভূতের গল্পে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৃত্যুর ছায়া থাকবেই— সকলেই জানেন। আর সেই মৃত্যুর সূত্রে, মৃত ব্যক্তির সূত্রে ফিরতেই হয় অতীতে। বাংলায় ভূত শব্দটি ইংরেজি গোষ্ট-এর চেয়ে অনেক বেশি ব্যঞ্জনাবাহী ও তাৎপর্যপূর্ণ। এমনকি প্রেত শব্দটিও একটু সংকীর্ণ— প্রেত নির্দিষ্টভাবে একটি ব্যক্তির মৃত আত্মার কথা ধরে থাকে। ভূত অনেক বেশি সাধারণ— ভূত অতীত। ভূত সময়ের উপর নির্ভরশীল। প্রেতের জন্য একজন জীবিত ব্যক্তি অবশ্য প্রয়োজনীয়। ভূত ‘একটি’ মৃত্যুর তোয়াক্কা না করেও থাকতে পারে— সে সময়স্পর্শী, সে সময় নিজেই, যে সময় অবর্তমান, যে সময় গত, সেই নিহত, নিহিত সময়ের প্রতিনিধি ভূত। … ভূত আসলে জমাট সময়। সময়ের চলমানতাকে অস্বীকার করার একটি চেষ্টা।” (আব্দুল কাফি, ‘ছায়াশরীরের গল্প’, আব্দুল কাফি ও ঋকসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় (সম্পাদিত), ছায়াশরীরের গল্প: সেকাল একালের ভূতের গল্প, কলকাতা: তৃতীয় পরিসর, জানুয়ারি ২০১৭, পৃ. ৯। )
সময়ের উল্টোচালে এভাবেই এখনের জীবিত ‘আমি’ আমার ‘থাকা’র জগত থেকে আমরই পূর্বপুরুষ; যারা ‘না-থাকার’ জগতে রয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে জ্বালছি প্রদীপ। আর সেকারণেই এক দিকে লোকবিশ্বাস বলছে, এই চোদ্দটি প্রদীপের আলো অশুভ শক্তিকে দূরে রাখে। আর অন্য দিকে বলছে, এই আলো দেখে ঘরে আসবেন মৃত পূর্বপুরুষরা, চোদ্দ পুরুষের সঙ্গে চোদ্দ প্রদীপের ধারণাটি এখানে লক্ষণীয়। ভূত চতুর্দশীর সঙ্গে এই পূর্বপুরুষের সূত্র ধরেই ফিরে আসবে যমের কথা। কেউ কেউ এই কার্তিকী চতুর্দশীকে যম চতুর্দশীও বলেন। সেই মত বলে, এই তিথিতে চোদ্দটি প্রদীপ আসলে উৎসর্গ করা হয় মৃত্যুলোকের অধিপতি যমের উদ্দেশেই। সেই আলো দেখে যম বুঝতে পারেন, কোন বংশ পূর্বপুরুষদের বিস্মৃত হয়নি। সেইমতো তিনি ওই বংশের পূর্বপুরুষদের এই একটি দিনের জন্য প্রিয়জনদের কাছে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেন। এভাবেই এক গল্পের সঙ্গে অন্য গল্পের মিশেলে ভূত চতুর্দশীর আসর জমে ওঠে গাঢ় রহস্যে। গল্পের কথা যখন উঠলই তখন পুরাণের দুটি গল্প এ প্রসঙ্গে বলে ফেলা যাক।
পুরাণের একটি গল্প বলছে, নরক নামে এক মহাপরাক্রান্ত অসুরবীরের কথা। এই নরক ছিলেন প্রাগজ্যোতিষপুরের রাজা। তাঁর অত্যাচারে পৃথিবী ত্রস্ত হয়ে উঠেছিল। স্বর্গলোক আক্রমণ করে নরক হরণ করেছিলেন পারিজাত বৃক্ষ এবং ইন্দ্রের মাতা অদিতির কানের দুল। তখন দেবরাজ ইন্দ্র উপায় না দেখে আসেন দ্বারকায়। শরণ নেন কৃষ্ণের। অতঃপর কৃষ্ণ রওনা দেন নরকবধের উদ্দেশ্যে। একা নন, সঙ্গে থাকেন পত্নী সত্যভামাও। তবে, যুদ্ধে কিছু বেগ পেতে হয় কৃষ্ণের মতো অপ্রতিরোধ্য যোদ্ধাকেও। একসময় নরকের অস্ত্রের আঘাতে তিনি সাময়িকভাবে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। সেই সময় যুদ্ধ পরিচালনা করেন সত্যভামা। যাই হোক, জ্ঞান ফিরে পেয়ে নরককে বধ করেন কৃষ্ণ। তাঁর আঘাত এবং বিজয় লাভের সংবাদ যখন পৌঁছয় দ্বারকায়, তখন যাদবরা প্রদীপ জ্বালিয়ে সারা নগর আলোকিত করে। কৃষ্ণের জয় ও কুশল উদযাপনে। সেই থেকে যে দিনটিতে নরককে বধ করেছিলেন কৃষ্ণ, সেই কার্তিক মাসের চতুর্দশী বা নরক চতুর্দশীতে প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা শুরু হয়।
নিছক গল্পের দিক থেকে যেমন এটি চতুর্দশীর উদ্যাপনের একটি ব্যখ্যা তৈরি করে তেমনই ‘নরক’ শব্দটিকে আবার দেখা যেতে পারে যমলোকের সঙ্গে এক করেও। চতুর্দশীর চোদ্দটি প্রদীপের আলো সাময়িক ভাবে হলেও তো নরকবাস থেকে মুক্তি দিচ্ছে মৃত পূর্বপুরুষদের! তাই ভূত চতুর্দশীকে বলা হছে নরক চতুর্দশী। আক্ষরিক অর্থ আর ব্যখ্যার বিশ্লেষণী অর্থ মিলেমিশে ভূত চতুর্দশীর এই আলো আঁধারে আসুন জেনে নেওয়া যাক আরও একটি গল্প। এই গল্পটি বেশ ইন্টারেস্টিং—
দানবরাজ বলি যখন স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখল করে নিলেন তখন নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ শুরু করল রাক্ষসরা। সেই আক্রোশ থেকে পার পেলেন না দেবতারাও। বলির তাণ্ডব ঠেকাতে দেবগুরু বৃহস্পতি ভগবান বিষ্ণুকে একটি উপায় বললেন। বামনের ছদ্মবেশে তখন নেমে এলেন শ্রীবিষ্ণু, তিন পা সমান জমি ভিক্ষা চাইলেন রাজা বলির কাছে। দানবরাজ কিন্তু শুরুতেই বুঝেছিলেন যে এই বামন আর কেউ নন, স্বয়ং বিষ্ণু। কিন্তু এরপরও তিনি রাজি হলেন চুক্তিতে। বামন অবতার তখন তাঁর এক পা রাখলেন স্বর্গে, অন্য পা মর্ত্যে। এরপর নাভি থেকে বের হয়ে এলো তাঁর তৃতীয় পা, যা রাখলেন বলি রাজার মাথার উপর। বিষ্ণুভক্ত প্রহ্লাদের পৌত্র বলি সেই চরণ মস্তকে ধারণ করলেন। সঙ্গে সঙ্গেই পাতালে নেমে গেলেন দানবরাজ বলি। মহাবলি মৃত্যুহীন প্রাণ। তিনি সপ্ত চিরজীবীর অন্যতম, অমর (বাকি ছয় জন চির অমর হলেন ব্যাসদেব, অশ্বত্থামা, কৃপাচার্য, পরশুরাম, হনুমান ও বিভীষণ)। কিন্তু জেনেশুনে জমি দান করায় এবং ভগবানের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করায় বলিকে কিছু করুণাও করলেন ভগবান বিষ্ণু। এই বলে আশীর্বাদ করলেন যে, প্রতি বছর পৃথিবীতে তাঁর পুজো হবে। সেই থেকে কালীপুজোর আগের রাতে বলি রাজা পাতাল থেকে উঠে আসেন পুজো নিতে। সহচর হিসেবে থাকে শত সহস্র ভূত, প্রেতাত্মা এবং অশরীরী!
আর ওই চোদ্দ শাক? চোদ্দটি শাকপাতার কী এতই মাহাত্ম্য যে তা অপদেবতার হাত থেকে রক্ষা করবে? ঠিক কী এর তাৎপর্য? পঞ্জিকা মতে যে চৌদ্দটি শাক এইদিন খেতে হয় সেগুলি হল: ওল, কেঁউ, বেতো, সর্ষে, কালকাসুন্দে, নিম, জয়ন্তী, শাঞ্চে, হিলঞ্চ, পলতা, শৌলফ, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা এবং শুষনী। সাধারণভাবে মনে করা হয়, পঞ্চভূতে নির্মিত এই প্রকৃতির কোল থেকে তুলে আনা ওই চোদ্দ প্রকার শাকের মধ্যেই মিশে আছে না-থাকার জগতের অন্তরীণ ছাপ। চোদ্দ প্রদীপের মতোই চোদ্দটি শাক— চোদ্দ সংখ্যার দ্যোতনায় চোদ্দ পুরুষের উদ্দেশ্যেই উৎসর্গীকৃত। আর একারণেই সেই চোদ্দ শাক ধোয়ার জলও পূর্বপুরুষের আশীর্বাদ স্বরূপ সমগ্র বাড়িতে ছিটিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে।
কিন্তু এই লোকাচারের অন্তরালেই মিশে আছে এক অন্য ব্যখ্যাও। চোদ্দ রকম ভেষজ শাকভক্ষণ শাস্ত্রের আচারের মোড়কে আসলে শারীরিক সুস্থতারই নিদান। হেমন্তর এই দ্রুত বদলে যাওয়া আবহাওয়ায় শীতের আবাহন হতে চলেছে, ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টায় শরীরকে তার হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতেই এই চোদ্দটি শাক ভক্ষণ। যা একই সঙ্গে আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যায় বহু পুরনো শিকড়ের কাছে। কৃষিভিত্তিক সভ্যতার উৎসবের কাছে। হেমন্তের সময় থেকে শীতের জন্য খাদ্যসঞ্চয়ের সেই প্রথাই যেন ফিরে আসে এই চোদ্দ শাক খাওয়ার মধ্যে দিয়ে।
নিজেকে এবং নিজের শিকড়কে ফিরে পাওয়ার এই প্রথার সঙ্গে জুড়ে যায় শরীর এবং ঘরবাড়ি শুদ্ধ রাখার প্রাকৃতিক রেওয়াজও। ঋতু পরিবর্তনের এই কালে নিজেকে, নিজের চারপাশকে যত্নে রাখার কথা স্মরণ করিয়ে দিতেই যেন এই উদ্যাপন। চতুর্দশীর ঠিক পরের দিনেই অমাবস্যার কালো রাতে হবে দেবী কালীর আরাধনা। উৎসবের সেই পরম মুহূর্তের প্রাক্ প্রস্তুতিতে আত্মশুদ্ধির লগ্নই হল ভূত চতুর্দশী। কেননা ভূতের থাকা-না-থাকার চাইতেও সত্য আমার এই ‘থাকা’, আমি যে আছি, এই পঞ্চভূতের শরীরে, এই জীবনের অস্তিত্ব নিয়ে আমার এই ‘থাকা’ই যে এক বিরাট প্রাপ্তি! না-থাকার দিনগুলিতে এমনই কোনো এক ভূত চতুর্দশীর দিনে আমর জন্যেও ঘরের কোণে কেউ হয়তো জ্বালবে একটি প্রদীপ। না-থাকার জগত থেকে তখন চেয়ে দেখব আমি। এই প্রদীপ জ্বালা তাই হয়তো নিজেরই জন্যে।
সানু ঘোষ।
বাঁশদ্রোণী, কলকাতা
১৩| ১১| ২০
খুব ভালো লেখা। সানুর গদ্য বরাবরই আমার প্রিয়।
উত্তরমুছুনঅনেক ধন্যবাদ। আমাদের পাশে থাকুন। ভালো থাকুন, অবশ্যই মতামত জানান, শেয়ার করুন। এরকম আরও বহু লেখা নিয়ে আমরা থাকব আপনাদের সঙ্গে।
মুছুন